শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭

আমাদের বন্ধুত্বের গল্প...





দেখতে দেখতে কতো বছর পেরিয়ে গেল কেমন আছে আমার পাগলীটা কে জানে একবার ফেসবুকে গিয়ে কি দেখবো? পাগলি কি এখনো ফেসবুক ব্যবহার করে ধুর এতো না ভেবে লগইন টা করেই ফেলি.....
> কি রে পাগলী কেমন আছিস?, বেঁচে আছি কি না মরে গেছি একবার খবরও নিলি না
> ভালো আছিরে পাগল, তুইও তো কোনো খোজ নিলিনা আমার আজ হঠাৎ এতো বছর পর কি মনে করে? তুই কেমন আছিস?
> আছি রে না থাকার মতো... তুই কি সত্যিই ভালো আছিস?... তোর কি আগের মতোই জ্বর আছে এখনো?
> পুরানো রোগ লেগেই আছে রে, ক্যানো কি হয়েছে তোর?
> কিছু হয়নি রে, এমনিই বললাম দেখতে দেখতে কত বছর পার হয়ে গেল তাই না রে
> হ্যাঁ রে .... কি করছিস তুই?
> তেমন কিছু না রে, তুই?
> তুই এখনও আগের মতোই আছিস রে, সেই পুরানো কথা! “তেমন কিছু না”, তেমন টা কি বলতো শুনি একটু
> আরে শুয়ে আছি তুই?
> আমিও ঔষুধ খেয়ে শুয়ে আছি তো এতো বছর পর মনে পড়লো আমার কথা?
> তোর কথা সব সময়ই মনে পড়ে রে কিন্তু কথা বলা হয় না আজ বুকের বাম পাশটা একটু বেশি ব্যথা করছে তাই তোর সাথে কথা বলছি ব্যথাটা কোমানোর জন্য.. হা হা হা..
> তুই এখনো আমাকে মনে রেখেছিস?
> হ্যাঁ রে, তোকে ভুলতে পারিনি জানিস এখনো মনে হয় তুই আমার পাশেই আছিস
> তুই অসলেই একটা পাগল ছিলি আর এখনো আছিস তা তোর বউ, ছেলে-মেয়ের ওদের কি খবর?
> হা হা হা.... বউ, ছেলে-মেয়ে ... আমি এখনো বিয়ে করিনি রে
> ক্যানো রে, তোর পাগলির জন্য তুই বিয়ে করিস নি?
> বাদ দে তো ও সব কথা, তোর ছেলে-মেয়ের কি খরব?
> ওরা আছে ওদের মতো করে ভালো বিয়ে দিয়ে দিয়েছি আমার দ্বায়িত্ব শেষ
> তোর সময় কাটে কিভাবে রে? কি করিস সারা দিন
> বই পড়ি, নামাজ পড়ি, মাঝে মাঝে পুরনো স্মৃতি মনে করে একা একাই হাসি এই ভাবেই কেটে যাচ্ছে দিন তোর ?
> আমারও তোর মতো করেই কেটে যাচ্ছে দিন গুলো তোর ছবি গুলো এখনো আমার কাছে আছে ওই গুলোই দেখি আর একা একাই তোর সাথে কথা বলি তুই কি এখনো আগের মতোই পাগলী আছিস? হা হা হা...
> হ্যাঁ রে, তোর পাগলী হয়েই আছি আগের মাতো পাগলের আত্মার আত্মা হয়ে বেঁচে আছি তুই এখন কোথায় আর কি করছিস
> গ্রামে একটা কুড়ে ঘর বানিয়েছি সেখানেই থাকি রে তুই কোথায় এখন?
> আমিও গ্রামে রে
> গ্রামে আছিস মানুষের গাছের ফল চুরি করিস না তো আগের মতো ..... হা হা হা...
> না রে, এখন আমার গাছের ফলই মানুষ খায়
> তুই কি এখনো ঠোঁট-এ লিপস্টিক দিস সেই আগের মতো?
> হ্যাঁ রে এখনো দেই তুই তো জানিসই সখ বলতে আমার ঐ একটা জিনিসই লিপস্টিক
> তুই কি এখনো আগের মতো ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে ছবি তুলিস?
> এখন আর ছবি তুলি না যেদিন থেকে তুই আর কথা বলিস না সেদিন থেকে পাগলীটার আর ছবিও তোলা হয় না
> তুই আমার উপর রাগ করে আছিস তাই না রে
> তোর উপর রাগ করবো ক্যানো বল, তুই তো আমার জানের জিগার দোস্ত ছিলি
> দোস্ত ছিলাম, এখন নাই রে?
> এখনো আছিস রে পাগল, পরের থাকবি
> কতো বছর তোর সাথে কথা হয়নি আজ নিজেকে আবার ফিরে পেলাম রে তুই তো আর ফোন দিতি না কথা বলার জন্য SMS ও দিয়ে বলতি না ফেসবুকে আসার জন্য
> ভেবেছিলাম তুই ব্যস্ত আছিস পরে হয়তো SMS দিয়ে বলবি, পাগলী ফেসবুকে আয় কথা বলি কিন্তু তুই আর SMS করিস নি আর কথাও বলা হয়নি
> দুজনের ছোট্ট ভুল বোঝা-বুঝির জন্য কতো বছর কথা বলা হলো না
> হ্যাঁ রে, কতো বছর হবে আর ১০ বছর হবে
> আমি আশায় ছিলাম তোর একটা ফোন আসবে সেই আগের মতোই কিন্তু .......
> আমিও আশা নিয়ে অপেক্ষায় ছিলাম রে কিন্তু বুঝতে পারিনি এতো বছর পর তুই কথা বলবি
> আমার দিন কাটতো তোর ছবিগুলো দেখে কিন্তু তোর সময় কাটতো ক্যামনে?
> ছেলে-মেয়েকে সময় দিয়ে তারপরও তোর জন্য ফেসবুকে আসতাম কিন্তু তোকে না পেয়ে বেশিক্ষন থাকতাম না
> আমাকে ফেসবুকে না পেয়ে একটা ফোনও তো দিতে পারতি সেই আগের মতো
> না রে, ভাবলাম তুই হয়তো বিয়ে করে আমাকে ভুলে গেছিস তোর উপর একটু অভিমানও ছিল
> ক্যানো অভিমান করে ছিলি রে? আজ এতো বছর পর তোর কাছে যদি একটা কথা জানতে চাই কিছু মনে করবি না তো?
> আজ এতো বছর পর কি জানতে চাচ্ছিস বল
> সেই সময় যদি আমি তোকে বলতাম, “পাগলী রে আমি তোকে অনেক ভালবাসিতুই কি আমাকে ভুল বুঝে দূরে চলে যেতি?
> এটা কথনো বলিস নি তো! আজ ক্যানো এতো বছর পর তোর মনে হচ্ছে এই কথা
> তখন অনেক ভয় পেতাম রে, যদি তুই ভুল বুঝে দূরে চলে যেতি তাই আর বলা হয় নি
> আর তাই এখনো একা একাই আছিস তাই না রে?
> তোর জন্য জমানো ভালবাসা কাউকে দিতে চাইনি তাই এখনো একা একাই আছি।
> একবার বলেই দেখতি, পাগলী তোকে কি বলে কথাটা শুনে।
> একবার বলেছিলামকিন্তু তুই বলেছিলি “এমন কথা বলে আমাদের বন্ধুত্বটা নষ্ট করে দিস না।”
> হ্যাঁ রে, বন্ধুত্বের জন্যই বলেছিলাম কিন্তু বন্ধু কি কারনে কথা বলা, যোগাযোগ করা বন্ধ করে দিয়েছিল তা আজও অজানাই থেকে গেছে।
> ভেবেছিলাম তোর বিয়ে হয়ে গেছে তাই তুই আর ফোন দিচ্ছি না। আর আমিও ‍SMS করিনি।
> তুই তো আমার সবই জানতিস তার পরও তোর মন এতো দূর্বলতা ছিল।
> এখন কি পারিস না তোর পাগলের কাছে ফিরে আসতে।
> তা আর সম্ভব না রে। ছেলে-মেয়ে বিয়ে দিয়ে দিয়েছি। তারা কি ভাববে বল।
> তা ঠিক রে। যাই হোক যতো দিন বেঁচে আছি এভাবেই পাশে থাকিস।
> পাগলী পাগলের পাশে আগেও ছিল, এখনো আছে এবং পরেও থাকবে। দেখছিস না পাগলি তোর SMS টা পেয়ে আর অভিমানটা ধরে রাখতে পারেনি। জানিস ছেলে এখনো তোর কথা বলে মাঝে মাঝে। তখন মনে হয় তুই আমার সাথে আগের মতোই কথা বলিস।
> ও এখনো আমাকে মনে রেখেছে। অনেক ভালো লাগলোরে শুনে।
> হ্যা রে, ছেলে তো তোর নাম দিয়েছিলো “কার্টুন” হা হা হা....
> হা হা হা .... আমি তো তাই রে,... অভিমান করেছিলি ক্যানো তা তো বললি না।
> তোর অনেক স্মৃতির মধ্যে অভিমানের করনটাও না হয় আমার কাছেই থাক। তুই কি এখনো আগের মতোই পাগলামী করিস?
> না রে, বয়সতো আর কম হয়নি। এখন কি আর পাগলামি করা মানায়!!
> হুম...... দেখ তোর সাথে কথা বলতে বলতে কতো রাত হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। অনেক ঘুম পাচ্ছে রে। তুইও ঘুমা। কাল সকালে তোকে ফোন করবো সেই আগের মতো..... শুভ রাত্রি পাগল।
> শুভ রাত্রি পাগলি.....                                                                                                                                                                                                                                                     
(দুটি দেহে একটি আত্মার অবস্থানই হলো বন্ধুত্ব)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন